সংগঠন পরিচিতি


খেলাফত আন্দোলনের ইতিহাস

পরম করুনাময় রব্বুল আলামীন দুনিয়ার বুকে খেলাফতে ইলাহিয়া প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হযরত আদম (আ:) কে সৃষ্টি করলেন। আর যুগে যুগে আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালাম মানব সৃষ্টির এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে অর্থাৎ আল্লাহর জমীনে আল্লাহর বিধান ও আল্লাহর খেলাফত প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন ও জিহাদ পরিচালনার মহান দায়িত্ব পালন করেন। চলমান এ জিহাদে আম্বিয়ায়ে কেরামের পর তাঁদের উত্তরসূরী ওয়ারিসে নবী, ওলামায়ে কেরাম এ ধারা অব্যাহত রাখেন। আকাবিরদের সেই ধারাবাহিকতায় উপমহাদেশের বিশিষ্ট বুজুর্গ হাকীমুল উম্মাত আশরাফ আলী থানবী রহ. এর অন্যতম খলীফা, হযরত মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর (রহ:) মানব জাতির মূল দায়িত্ব খেলাফতে ইলাহিয়া প্রতিষ্ঠার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন এবং ১৯৮১ সালের ২৯ নভেম্বর গঠন করলেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

কেন এই খেলাফত আন্দোলন

 যেহেতু আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ‘যারা আল্লাহ তা‘আলার অবতীর্ণ বিধান অনুসারে শাসনকার্য চালায় না, তারা কাফের, জালেম, ফাসেক (সূরা মায়েদা, আয়াত নং ৪৪, ৪৫, ৪৭) । ‘হযরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন, সৃষ্টিকর্তার অবাধ্য হয়ে সৃষ্টিজীবের আনুগত্য বৈধ নয় (মুসান্নাফে আবি শাইবা হাদিস নং- ৩৩৭১৭  মিশকাতুল মাসাবিহ হাদিস নং- ৩৬৯৬)। যেহেতু আল্লাহ তা’আলা নির্দেশ দিয়েছেন,“পূন্য ও পরহেজগারীর কাজে সহায়তা কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহায়তা কর না” (সূরা মায়েদা, আয়াত নং ০২) । 


প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাযি:) আল্লাহ পাকের শুধু একটি হুকুম যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধেও এই বলে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমি জীবিত থাকতে দ্বীনের ক্ষতি হবে? খাইরুল কুরুনের যুগেই ইমাম হুসাইন (রাযি:) জিহাদে অবতীর্ণ হয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। হযরত ইমাম আবু হানীফা (রহ.) খলীফা মনছুরের জুলুমের বিরুদ্ধে জিহাদের সমর্থনে ফতোয়া দিয়ে কারাগারে শাহাদাত বরণ করেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ:) শুধু কুরআনের শাশ্বত মর্যাদা রক্ষার্থে খলীফা মু’তাসিম বিল্লাহর হাতে নির্মমভাবে নিপীড়িত হয়েছেন। সম্রাট আকবরের দ্বীনে ইলাহীর বিরুদ্ধে আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়ে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী (রহ:) গোয়ালিয়রের জেলে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। এতে প্রমানিত হয় যে, খেলাফত প্রতিষ্ঠার কাজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয।  


 এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে পূর্বসূরীদের পথ ধরে ধর্মহীন শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জিহাদ করে আল্লাহ’র খেলাফত তথা ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থেকে দায়িত্ব মুক্ত হতে হবে। মহান আল্লাহর আদালতে জবাবদিহিতা থেকে বাঁচতে হবে। এ জন্যই হযরত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফন-দাফনের কাজও বিলম্বিত করতে হয়েছিল। সুতরাং খেলাফতের কাজ সবচে অগ্রগণ্য ও অপরিহার্য। 

 

খেলাফত আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

আল্লাহর জমিনে আল্লাহর খেলাফত কায়েমের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য হাসিল করা এবং  দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, মুক্তি ও শান্তি লাভ করা। 

আদর্শ: আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কেরাম রিদওয়ানুল্লাহি তা‘আলা আলাইহিম আজমাইন তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আদর্শ অনুসরণ করা। 

কর্মনীতি: কুরআন-সুন্নাহ ও শরীয়তের মাপকাঠিতে কার্য সম্পাদন করা এবং শরীয়তবিরোধী সকল কাজ বর্জন করা।

কর্মসূচী: দলীয় ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শরীয়তসম্মত যেকোন কর্মসূচী গ্রহণ করা।