সংগঠন সংবাদ

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত

বিতর্কিত সকল পাঠ্যপুস্তক বাতিল, ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু  নির্বাচনের দাবিতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সোমবার বিকাল ০৩.০০ টায় রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে  সমাবেশ ও গনমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, চলতি ২০২৩ সালের মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন  পাঠ্যপুস্তকে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক বিবর্তনবাদের অনুপ্রবেশ, ইসলামের পর্দার বিধানকে নিরুৎসাহিত করা, পৌত্তলিক ও ব্রাক্ষণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং অন্যের লেখা, গবেষণালব্ধ তথ্য ইত্যাদি নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে; যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশা জনক। ৯২ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা চেতনার সাথে সংগতি রেখে শিক্ষা সিলেবাসকে প্রনয়ণ করতে হবে। এজন্য বিজ্ঞ আলেম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের সম্পৃক্ত করে জাতীয়  শিক্ষা কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, সিলেবাস সংশোধনের জন্য সরকারকে বারবার হুশিয়ার করার পরও শিক্ষামন্ত্রীর গোয়ার্তুমী ও মিথ্যাচারে জনগণকে বিস্মত করেছে। আলেমসমাজ নাকি মিথ্যা  গুজব ছড়াচ্ছিলেন। ঔদ্ধত্য ও মিথ্যাচারের জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে জাতির কাছে  প্রকাশ্যে  ক্ষমা চাইতে হবে। তবে দেরীতে হলেও সরকারের শিক্ষা মন্ত্রীর শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন অন্যান্য ইসলাম বিদ্বেষী লেখা ও বিজাতীয়  সাংস্কৃতি গুলো পাঠ্যবই থেকে বাদ দিতে হবে।

মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, দ্রব্যমূল্যের আগুনে বর্তমানে সমগ্র বাংলাদেশ জ্বলছে। গ্যাস বিদ্যুৎ তেল চাল আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য লাগামহীন হওয়ায় সাধারণ মানুষ এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। আর্থিক সংকটে জনগণ চরম কষ্টে নিমজ্জিত। জাতিকে এ কঠিন অবস্থা থেকে উদ্ধারে অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে।

আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে নতুন পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে মানুষের জন্ম পরিচয় ভুলিয়ে দিতে চায়। আলেমরা সজাগ থাকতে  মুসলমানদেরকে বেঈমান বানানোর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না।

মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, যারা বলেছে সিলেবাস নিয়ে আলেম-ওলামারা মিথ্যাচার করছে, আজ তারাই মিথ্যাবাদী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। নবম শ্রেণীর সহ আরো সকল পাঠ্য বইয়ে অসঙ্গতি রয়েছে সেগুলোকেও বাতিল করতে হবে।  বাংলাদেশকে আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী বলেন, সরকারের ভিতরে  ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় নাস্তিক এদেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কৌশলে নাস্তিক বানানোর গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এদের কারনেই সরকারের সকল অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।আলেম ওলামাসহ জনগন সরব প্রতিবাদ আন্দোলন না করলে বিতর্কিত সিলেবাস প্রত্যাহার করা হতোনা। বাকি  বইগুলো থেকেও সকল অসঙ্গতি দূর করতে হবে।  এবং  পাঠ্য বইয়ে ভূলের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

দলের প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী ও মাওলানা আফম আকরাম হোসাইনের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি, নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, যুগ্ম মহাসচিব হাজী জালাল উদ্দীন বকুল, মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মুফাসসির হোসাইন, মুফতী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা শেখ সাদী, মুফতি ইলিয়াস মাদারীপুরী, মুফতি আবুল হাসান কাসেমী,মুফতি জসিম উদ্দিন, মুফতি আখতারুজ্জামান আশরাফী, মাওলানা আল- আমিন, মুফতি জাকির বিল্লাহ, ও মৌলভী আঃ রকিব প্রমুখ।